মোঃ আশরাফ ইকবাল পিকলু মাজমাদার
কুষ্টিয়া জেলা প্রতিনিধি ।
ফকির, লালন সাঁই, লালন শাহ, মহাত্মা লালন, একজন আধ্যাত্মিক ফকির সাধক, মানবতাবাদী, সমাজ সংস্কারক, দার্শনিক, অসংখ্য গানের গীতিকার, সুরকার ও গায়ক, ফকিরি গানের অগ্রদূত।
১৭৭৪ সালের ১৭ অক্টোবর ভারতবর্ষের
অবিভক্ত বাংলার কুষ্টিয়া জেলার কুমারখালী থানার ছেউড়িয়া গ্রামে লালন জন্ম গ্রহন করেন।
১৮৯০ সালের ১৭ অক্টোবর লালন মৃত্যুবরন করেন।
লালন ছিলেন একজন মানবতাবাদী সাধক। যিনি ধর্ম, বর্ণ, গোত্রসহ সকল প্রকার জাতিগত বিভেদ থেকে সরে এসে মানবতাকে সর্বোচ্চ স্থান দিয়েছিলেন। অসাম্প্রদায়িক এই মনোভাব থেকেই গান রচনা করেছেন। লালনের গান ও দর্শন যুগে যুগে প্রভাবিত করেছে বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর,কবি কাজী নজরুল ও অ্যালেন গিন্সবার্গের মতো বহু খ্যাতনামা কবি, সাহিত্যিক, দার্শনিক, বুদ্ধিজীবীসহ অসংখ্য মানুষকে। গানগুলো যুগে যুগে বহু সঙ্গীতশিল্পীর কণ্ঠে লালনের এই গানসমূহ উচ্চারিত হয়েছে।
লালনের গান ও দর্শনের দ্বারা অনেক বিশ্বখ্যাত কবি, সাহিত্যিক, দার্শনিক প্রভাবিত হয়েছেন। বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ লালনের মৃত্যুর পর তার আখড়া বাড়িতে যান এবং লালনের দর্শনে প্রভাবিত হয়ে ১৫০টি গান রচনা করেন। বিভিন্ন বক্তৃতা ও রচনায় তিনি লালনের প্রসঙ্গ তুলে ধরেছেন।
লালনের মানবতাবাদী দর্শনে প্রভাবিত হয়েছেন সাম্যবাদী কবি কাজী নজরুল ইসলাম।
মার্কিন কবি এলেন গিন্সবার্গ লালনের দর্শনে প্রভাবিত হন এবং তার রচনাবলিতেও লালনের রচনাশৈলীর অনুকরণ দেখা যায়। আফটার লালন নামে একটি কবিতাও রচনা করেন।
পল্লীকবি জসীমউদ্দীন, মুহম্মদ মনসুরউদ্দীনের মতো অভিজ্ঞ লেখকেরা লালনকে নিয়ে গবেষনা করেছেন।
লালনের সংগীত ও ধর্ম-দর্শন নিয়ে দেশ-বিদেশে নানা গবেষণা হচ্ছে।
১৯৬৩ সালে কুষ্টিয়ার ছেউড়িয়ায় আখড়া বাড়ী ঘিরে লালন লোকসাহিত্য কেন্দ্র প্রতিষ্ঠিত হয়।