নিজস্ব প্রতিনিধ
শিহান প্রতিদিনের মতো ভোরবেলা নিয়মিত তার নিজ কর্মস্থলে যাতায়াত করত শিহানের
হাতের দামি মোবাইলফোন টার্গেট করে দেশীয় অস্ত্র নিয়ে পথ রোধ করে ছিনতাইকারী চক্রের ছয় সদস্য। তাদের কেউ চায়ের দোকানদার, কেউ পরিবহন চালক, কেউ কেউ পেশাদার ছিনতাইকারী।
সেই দিনটি ছিল বৃহস্পতিবার (১২ ডিসেম্বর)। ভোর আনুমানিক ৫ টা ২০ মিনিট।
শিহান অফিসে যাওয়ার পথে কালিয়াকৈর উপজেলার ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের মৌচাক হানিফ স্পিনিং মিলের সামনে গেলে সড়কের অপরপাশ থেকে আচমকা এসে শিহানকে পথরোধ করে আটকে দেয় ছিনতাইকারীরা। এসময় হাতের মোবাইলটি ছিনিয়ে নিতে গেলে বাধা দেয় শিহান। পরে ছিনতাইকারীদের হাতে থাকা ধারালো অস্ত্র দিয়ে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে মোবাইল, মানিব্যাগ, ঘড়ি, এটিএম কার্ড নিয়ে পালিয়ে যায় ছিনতাইকারী চক্রের সদস্যরা। দাঁড়ালো অস্ত্রের আঘাতে ক্ষতবিক্ষত শিহান মাটিতে লুটিয়ে পড়ে ঘটনাস্থলেই মারা যান।
এ ঘটনার পর নিহতের পিতা তানভির হোসেন নান্নু মিয়া বাদী হয়ে কালিয়াকৈর থানায় একটি মামলা করেন।
মামলার পর ঘটনায় জড়িতদের গ্রেফতারে অভিযানে নামে পুলিশ। প্রথমে একটি চোরাই মোবাইলের কারবারি আনোয়ার হোসেনের কাছ থেকে নিহতের মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়। পরে তাকে গ্রেফতার ও তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহার করে আসামিদের শনাক্ত করা হয়।
সর্বশেষ সোমবার (১৬ ডিসেম্বর) রাতে জেলার সালনা, কোনাবাড়ি, বাসন ও টঙ্গী এলাকায় অভিযান চালিয়ে ছিনতাইকারী ছয়জনকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হন পুলিশ।
গ্রেফতারকৃতরা হলেন—তাকওয়া পরিবহনের চালক ময়মনসিংহ ধোবাউরা উপজেলার আমগাছীহান্দা গ্রামের হালিমউদ্দিন সরওয়ার হোসেন (২৮), সিএনজি চালক কুড়িগ্রাম রৌমারি উপজেলার কাশিয়াবাড়ি গ্রামের আলী আজগরের ছেলে নাজিম উদ্দিন (৩৫), সিএনজি চালক কুড়িগ্রাম উলিপুর থানার মধুপুর গ্রামের আজগর আলীর ছেলে ফুল ইসলাম (৪২), আজমেরী বাসের হেলপার লক্ষ্মীপুর সদরের জামেরতলী গ্রামের মালেকের ছেলে জুয়েল (২৪), তাকওয়া বাসের স্টাফ জয়পুরহাটের মোহনপুর গ্রামের আব্দুল জলিলের ছেলে মো. মিলন (২৭) এবং চায়ের দোকানদার ভোলার চরফ্যাশনের সুলতান বয়াতির ছেলে আনোয়ার হোসেন (৩৫)।
কালিয়াকৈর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রিয়াদ মাহমুদ ছয়জন গ্রেফতারের ঘটনা নিশ্চিত করেছেন।