বিভাগীয় ক্রেইম ক্রসপন্ডেন্ট, রংপুর ঃ
দীর্ঘদিন থেকে জাতীয় পার্টি ষড়যন্ত্রের শিকার বলে জানিয়েছেন জিএম কাদের।এবারের দ্বাদশ নির্বাচন ঘিরে জাতীয় পার্টিতে চলছে চরম অস্থিরতা। দলের ভেতরেই চেয়ারম্যান ও মহাসচিবের পদত্যাগ দাবি করা হচ্ছে। এটাকে দল ভাঙার ষড়যন্ত্র হিসেবে দেখছেন জাপা চেয়ারম্যান জিএম কাদের।
২০ জানুয়ারি শনিবার বিকেলে রংপুর নগরীর সেনপাড়ায় স্কাই ভিউয়ের সামনে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এসব কথা বলেন।
জিএম কাদের বলেন, জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের ব্যাপক জনপ্রিয়তা নষ্ট করতে তার প্রতিপক্ষরা সবসময় চেষ্টা করেছে। সেই ১৯৯১ সাল থেকে এখন পর্যন্ত দল ভাঙাসহ নানা রকম ষড়যন্ত্র হয়েছে। এবারেও দলের সদস্যদের ভুল বুঝিয়ে এই ষড়যন্ত্র করা হয়েছে। তবে আমাদের দলের সদস্যরা তাদের ভুল বুঝতে পেরেছেন। তাই বলতে পারি, আপাতত দল ভাঙার কোনো আশঙ্কা নেই।
গোলাম মোহাম্মদ কাদের বলেন, জাতীয় পার্টির পক্ষ থেকে যেসব সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে, সেই সিদ্ধান্তগুলো দলের নেতাকর্মীরা উপলব্ধি করে ভালোভাবে নিয়েছে।
সংসদের বিরোধী দল প্রসঙ্গে জিএম কাদের বলেন, গত সংসদেও বিরোধী দল হিসেবে জাতীয় পার্টি ছিল। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আ’লীগ নৌকা প্রতীক নিয়ে সংখ্যাগরিষ্ঠ আসন পেয়ে সরকার গঠন করেছে। জাতীয় পার্টি ১১টি আসন নিয়ে সংসদে প্রতিনিধিত্ব করছে। সেই কারণে আমরা মনে করি জাতীয় পার্টি বিরোধী দলে থেকে ভূমিকা রাখতে পারে। ইতোমধ্যে জাতীয় পার্টির সংসদীয় দলের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী আমাকে (জিএম কাদের) বিরোধী দলীয় নেতা, ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদকে বিরোধী দলীয় উপনেতা এবং মুজিবুল হক চুন্নুকে বিরোধী দলীয় চিফ হুইপ প্রস্তাব করে একটি রেজুলেশন আজকে সংসদের স্পিকারের কাছে পত্র মারফত পাঠানো হয়েছে। আশা করছি, ৩০ জানুয়ারি সংসদ বসার পর বোঝা যাবে, কে বিরোধী দলীয় নেতা।
জাপা চেয়ারম্যান বলেন, তবে বিরোধী দল হলে সংসদে কার্যকর বিরোধী দলের ভূমিকা পালন করব। সরকারের গঠনমূলক সমালোচনা করব। সেই সাথে খারাপ বিষয়গুলো তুলে ধরে সরকারের সঠিক পথে পরিচালনা করতে সহায়তা করব।
বিরোধী দল বিষয়ে সরকারের পক্ষ থেকে কোনো ইঙ্গিত দেয়া হয়েছে কি না এই প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, এখন পর্যন্ত কোনো ধরনের ইঙ্গিত দেয়া হয়নি। তবে জাতীয় পার্টিকে বিরোধী দল করা না হলেও জাতীয় পার্টি দেশের মানুষের কল্যাণে কাজ করবে, সংসদে মানুষের অধিকার নিয়ে কথা বলবে।
এসময় উপস্থিত ছিলেন জাতীয় পার্টির কো-চেয়ারম্যান ও রংপুরের মেয়র মোস্তাফিজার রহমান, জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যানের উপদেষ্টা আলাউদ্দিন মিয়া, রংপুর জেলা জাতীয় পার্টির সদস্য সচিব আব্দুর রাজ্জাক, মহানগর জাতীয় পার্টির সাধারণ সম্পাদক এস এম ইয়াসীর, কেন্দ্রীয় সাংস্কৃতিক সম্পাদক আজমল হোসেন লেবু, মহানগর জাতীয় পার্টির সিনিয়র সহ-সভাপতি লোকমান হোসেনসহ অন্যান্য নেতারা।
প্রসঙ্গত, গোলাম মোহাম্মদ কাদের রংপুর-৩ (সদর) আসন থেকে এবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন। বিজয়ী হওয়ার পর ঢাকায় চলে গিয়েছিলেন। এবার ৫ দিনের সফরে রংপুরে এসেছেন তিনি।