রহিদুল ইসলাম, রাজশাহী :
হঠাৎ করেই ভারত থেকে আসা নদীর পানি ঢুকে পড়েছে রাজশাহীর বাঘার পদ্মায়। পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় পদ্মানদী অববাহিকার চরাঞ্চলের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে।
পানিতে বাদাম ও তিলের ক্ষেত তলিয়ে গেছে। ফসল ঘরে তোলার কথা থাকলেও দুই এক সপ্তাহের মধ্যে পানিতে তলিয়ে গেছে প্রায় দেড়শ কৃষকের স্বপ্ন। উজান থেকে আসা পানি লোকালয়ে ঢুকে প্লাবিত হচ্ছে নিম্নাঞ্চল।
কৃষি বিভাগ জানিয়েছে, ক্ষতি নিরূপণে কাজ করছে কৃষি বিভাগ। খরার কারণে এবার আবাদ নামলা হয়েছে বলে জানান কৃষকরা ।
উপজেলার কালিদাসখালি গ্রামের ক্ষতিগ্রস্থ কৃষক সহিদুল ইসলাম জানান, ৩২ বিঘা বাদামের ক্ষেত বন্যার পানিতে ডুবে গেছে তার। আর কয়েকদিনের মধ্যে ফসল ঘরে উঠতো। ক্ষতির দুশ্চিন্তায় রয়েছেন তিনি।
তিনি আরও জানান, সোমবার (১ জুলাই) বিকেল থেকে পদ্মার পানি লোকালয়ে ঢুকতে থাকে। চকরাজাপুর গ্রামের হাবিবুর রহমান জানান, বাদাম আবাদে প্রতি বিঘায় একুশ থেকে বাইশ হাজার টাকা খরচ হয়েছে।
বুধবার (৩ জুলাই) কথা হলে তারা জানান- কৃষক রাজা শেখ, হাশেম ফকির, রহমান শিকদার, শুকুর শেখ, ইউসুফ শেখ ,
ওয়াহব আলী শেখসহ ১৫০ জন কৃষকের ৬০০/৭০০ বিঘা জমির বাদাম ফসল দিনের মধ্যে তলিয়ে গেছে। এছাড়াও আবাদ করা ৪/৫ বিঘা তিল ফসলও তলিয়ে গেছে।
চকরাজাপুর, কালিদাশখালি ও লক্ষীনগর এলাকায় চরাঞ্চলে জেগে উঠা পদ্মার চরে এক হাজার বিঘা জমিতে বাদাম আবাদ করেছিলেন এসব কৃষকরা। পদ্মায় পানি আসায় ৬০০/৭০০ বিঘা জমির বাদাম তলিয়ে গেছে।
উপজেলার চকরাজাপুর ইউনিয়নের লক্ষীনগর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য ফজলু সেখ জানান, বন্যার কারণে ক্ষতির শিকার হয়েছেন কৃষকরা। অনেকেই তলিয়ে যাওয়া অপরিপক্ক বাদাম তুলেছেন। সেটাতেও লাভ হবেনা, কারণ পানিতে বাদাম পচে যায়।
চকরাজাপুর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান আজিজুল আযম বলেন, পদ্মার নদীর জেগে উঠা চকরাজাপুর, কালিদাশখালি চরে বন্যার পানি ভারত থেকে আসায় এলাকার বাদাম ও তিল তলিয়ে গেছে। বর্তমান ইউপি চেয়ারম্যান ডিএম মনোয়ার হোসেন বাবুল দেওয়ান জানান, এতে তার ইউনিয়নে দেড় শতাধিক কৃষকের ক্ষতি হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্থ কৃষকের তালিকা করা হচ্ছে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শফিউল্লাহ সুলতান বলেন, পদ্মায় পানি আসায় কৃষকের ফসলের ক্ষতি নিরূপণে কাজ করছে কৃষি বিভাগ। তবে পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকলে ক্ষতি বেশি হবে। তিনি জানান, ৪৭৩ হেক্টর জমিতে বাদামের আবাদ হয়েছে।
রাজশাহীর পাউবোর নিবার্হী প্রকৌশলী আরিফুর রহমান জানান, মঙ্গলবার পানির উচ্চতা ছিল ১১ দশমিক ৬২ মিটার। বিপৎসীমা হলো ১৮ মিটার।
সেক্ষেত্রে বিপৎসীমা অতিক্রম করার সম্ভাবনা কম। দীর্ঘমেয়াদী বন্যা হওয়ার আশংকা নেই।
উপজেলা নির্বাহিকর্মকর্তা তরিকুল ইসলাম জানান, সব ধরনের বন্যা মোকাবেলার প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। তাৎক্ষণিকভাবে যেখানে প্রয়োজন হবে ব্যবস্থা নেয়া হবে।