রহিদুল ইসলাম, রাজশাহী:
চাঁপাইনবাবগঞ্জে ছাদে শুকাতে দেওয়া ককটেলের বিস্ফোরণে আহত এর ‘কারিগর’ হাফিজুর রহমান ওরফে সুরুজ (৩৫) হাসপাতাল থেকে পালিয়ে গিয়েছেন। গুরুত্বর আহত অবস্থায় তাকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল। ছিলেন অর্থোপেডিক্স বিভাগের ৩১ নম্বর ওয়ার্ডে। রোববার সকাল থেকে তাকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না।
ওয়ার্ডের একজন নার্সিং কর্মকর্তা বলেন, ‘অনেক সময় পুলিশ কেসের রোগীরা কাউকে না জানিয়েই গোপনে চলে যান। তারা বাইরে কোন বেসরকারি হাসপাতাল কিংবা ক্লিনিকে গোপনে চিকিৎসা নেন। সুরুজের বিষয়টিও সে রকম হতে পারে। বিষয়টি ঊর্দ্ধতন কর্তৃৃৃৃপক্ষকে জানানো হবে।’
সুরুজের বাড়ি চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলার ইসলামপুর ইউনিয়নের পেঁচিপাড়া গ্রামে। গত শুক্রবার (১৩ ডিসেম্বর) বিকালে ছাদে শুকাতে দেওয়া ককটেলের বিস্ফোরণে তিনি গুরুত্বর আহত হন। ঘটনার পর থেকেই পরিবারের পুরুষ সদস্যরা পলাতক রয়েছেন। ককটেল বিস্ফোরণের আলামতও পানি দিয়ে ধুয়ে-মুছে গায়বে করা হয়েছে বলে স্থানীয়রা জানিয়েছেন।
তারা জানান, সুরুজ আওয়ামী লীগের সমর্থক। তিনি ককটেলের কারিগর। অনেক দিন আগে তৈরি করা ককটেল শুকিয়ে নিতে রোদে শুকাতে দেওয়া হয়েছিল। শুকানোর পর সুরুজ ককটেলগুলো ব্যাগে ভরছিলেন। তখনই বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। তিনি তিনি ঝলসে যান। স্থানীয়দের ধারণা, নাশকতামূলক কোন কর্মকাণ্ডের জন্যই ককটেল প্রস্তুত করা হচ্ছিল।
রোববার সকালে রামেক হাসপাতালের ৩১ নম্বর ওয়ার্ডের সবগুলো বিভাগ এবং বাইরের বারান্দায় খুঁজেও রোগী সুরুজকে পাওয়া যায়নি। নার্সেস স্টেশন থেকে একজন নার্সিং কর্মকর্তাও তাকে খুঁজে পাননি। খাতাপত্র দেখে ওই কর্মকর্তা জানান, খাতাপত্রে ভর্তি থাকা রোগী হিসেবেই সুরুজের নাম লেখা আছে। তাকে কোথাও স্থানান্তর করা হয়নি। আবার ছাড়পত্রও দেওয়া হয়নি। সে অনুযায়ী তিনি হাসপাতালে ভর্তিই আছেন। কিন্তু তাকে পাওয়া যাচ্ছে না।
রামেক হাসপাতালের মুখপাত্র ডা. শংকর কে বিশ্বাস বলেন, ‘এত বড় হাসপাতালে আসলে সব রোগীকে দেখে রাখা সম্ভব হয় না। কেউ ছুটি না নিয়েই গোপনে পালিয়ে গেলে আমাদের কিছু করার থাকে না। যারা এভাবে পালিয়ে যায় তাদের কোন না কোন অসৎ উদ্দেশ্য থাকে।’
চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রইস উদ্দিন বলেন, ‘আমরা সুরুজকে খুঁজছি। তাকে পেলে অবশ্যই ধরব। সে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি ছিল এটা জানতাম না। পালিয়ে গেছে কি না সেটাও জানি না। তবে তার বাড়িতে কোন পুরুষ নেই।’
ওসি জানান, ককটেল বিস্ফোরণের ওই ঘটনায় থানায় এখনও কোন মামলা হয়নি। পরিবারের কাউকে পেলে জিজ্ঞাসাবাদ এবং প্রাথমিক তদন্ত শেষে আইনগত ব্যবস্থা নিতে চান তারা।