রহিদুল ইসলাম, রাজশাহীঃ
চলতি বোরো মৌসুমে রাজশাহী জেলাতে বোরো ধান কাটা ও মাড়াইয়ে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন কৃষকেরা। ঘুর্নিঝড় রেমালের কিছুটা প্রভাব রাজশাহীতে পড়ায় দু-তিন দিন বোরো ধান কাটা ও মাড়াই বন্ধ থাকলেও সোমবার হতে পুরোদমে চলছে ধান কাটা মাড়াইয়ের কাজ।
তবে এবার বোরো ধান সঠিক সময়ের পরে কিছুটা রোপণ করাই জৈষ্ঠ্যমাস পার হয়ে আষাড়ের সপ্তাহ ব্যাপি সময় লাগতে পারে বলে কৃষকদের কাছ থেকে জানাগেছে।
যার ফলে জ্যৈষ্ঠমাস ও আষাড়ের প্রথম সপ্তাহজুড়ে পুরোদমে থাকবে এই সোনালি ফসল কাটা-মাড়াই ও ঘরে তোলার ব্যস্ততা।
রাজশাহী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর বলছে, রাজশাহী জেলায় এবার গত এক বছরের ব্যবধানে বোরো আবাদ বেড়েছে ১২ হাজার ৫৬০ হেক্টর জমিতে। ছাড়িয়ে গেছে বোরো আবাদের লক্ষ্যমাত্রাও।
এবার ‘ভালো ফলন’ পাচ্ছেন কৃষকেরা। সেই খুশির মাত্রা আরও বাড়িয়ে দিয়েছে ‘আশানুরূপ বাজার দর‘।
রাজশাহী আঞ্চলিক কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, রাজশাহীতে চলতি মৌসুমে ৭০ হাজার ১৬০ হেক্টর জমিতে বোরো আবাদ হয়েছে, যার উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে তিন লাখ ৪৬ হাজার ৭০ টন ধান।
২০২২-২৩ অর্থ বছরে আবাদ হয়েছিল ৬৮ হাজার ৬০০ হেক্টর জমিতে; যেখানে উৎপাদন হয়েছিল তিন লাখ ৩২ হাজার ৪৩৯ টন ধান।
“অর্থাৎ এক বছরের ব্যবধানে বোরো আবাদ বেড়েছে এক হাজার ৫৬০ হেক্টর জমিতে। সেখানে উৎপাদন বাড়ছে ১৩ হাজার ৬৩১ টন।”
এবার রাজশাহীতে বিভিন্ন জাতের বোরো আবাদ বা ধান চাষ করা হয়েছে। নিম্নে ওইসব বোরো ধানের জাত ও ফলন তুলে ধরা হলোঃ ব্রি-ধান ৫৮। এর ফলন প্রতি বিঘায় ২৫ -২৭ মণ, ব্রি-ধান ৮৮। এর ফলন প্রতি বিঘায় ২৪-২৬ মণ, ব্রি-ধান ৮৯। এর ফলন প্রতি বিঘায় ২৮-৩০ মণ, ব্রি-ধান ৯২, এর ফলন প্রতি বিঘায় ২৮/৩০ মণ।
ব্রি-ধান ২৮, এর ফলন প্রতি বিঘায় ২০-২২ মণ। ব্রি-ধান ২৯, এর ফলন প্রতি বিঘায় ২৫-২৬ মণ।
এদিকে জেলার হাট-বাজারে উঠেছে নতুন ধান। অনেকে চাষের খরচের পাওনা মেটাতে জমি থেকে মাড়াইয়ের পরপরই ধান বিক্রি করে দিচ্ছেন।
সোমবার রাজশাহীর বাগমারা উপজেলার তাহেরপুর ও দূর্গাপুর উপজেলা সদর হাটে
নতুন ধান প্রতি মণ বিক্রি হচ্ছে ১ হাজার ২৫০ টাকা থেকে ১ হাজার ৩০০ টাকা
দামে ধান বিক্রি হয়েছে।
রাজশাহীর কৃষকেরা বলছেন, রবিশস্য তুলতে দেরি হওয়ায় এবার বোরো আবাদের সময় কিছুটা দেরি হয়েছে। অধিকাংশ চাষি দেরিতে ধান লাগিয়েছিলেন। তার মধ্যে ছিল গরমের নেতিবাচক প্রভাব এবং শরিষা । পানির সংকটে রোপণ নিয়ে ছিল উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা।
তবে সব উদ্বেগ-অনিশ্চয়তা কাটিয়ে প্রত্যাশার চেয়ে বেশি জমিতে ধান আবাদ হয়েছে। এখন ফসল ঘরে তোলায় শেষ মুহূর্তের ব্যস্ত সময় পার করছেন তারা।
“আবহাওয়া প্রতিকূল থাকায় এবার আবাদ বেশি হয়েছে। ইতোমধ্যেই ৫০ শতাংশের বেশি ধান কৃষকের ঘরে উঠে গেছে।”