1. admin@dakbela.com : admin :
মাদকসেবী ও অপরাধের অভয়ারণ্য শেখ রেহানার বাংলো - ডাক বেলা
সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৪:২৪ পূর্বাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম :
পবিত্র কাবাঘরে ‌জয় বাংলা স্লোগান দেওয়া যুবক পদুয়ার হারুন কসবায় চিলড্রেন ওয়েলফেয়ার ফাউন্ডেশনের মেধাবৃত্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত নবীনগরে মোবাইল চুরির অপবাদ সহ্য করতে না পেরে যুবকের আত্মহত্যা শ্রীপুরে বোতাম তৈরি  কারখানায় ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড! আগুন নিয়ন্ত্রণে ৭টি ইউনিট  রাজশাহীতে সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণ গেল স্বামী-স্ত্রী ও শ্যালিকার আরএমপি’র রাজপাড়া থানার নতুন ভবনের উদ্বোধন মিঠাপুকুরে ওয়াল্ডভিষণ CVA কর্ম-পরিকল্পনা সভা অনুষ্ঠিত। কালিয়াকৈর মডেল প্রেস ক্লাবের বাৎসরিক শিক্ষা সফর কক্সবাজার গোপালপুর দ্বী-মূখী উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে অনিয়মের অভিযোগ কসবায় বৃহত্তর কুমিল্লা জেলা কিন্ডারগাটের্ন এসোঃ বৃত্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত

মাদকসেবী ও অপরাধের অভয়ারণ্য শেখ রেহানার বাংলো

ডাক বেলা ডেস্ক :
  • প্রকাশের সময় : রবিবার, ৮ ডিসেম্বর, ২০২৪
  • ১৫ বার পঠিত

 

সরকার মাজহারুল ইসলাম (গাজীপুর জেলা) প্রতিনিধি

সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছোট বোন শেখ রেহানার গাজীপুরের কালিয়াকৈরে এখন অরক্ষিত বিলাসবহুল বাংলো। সেই অরক্ষিত বাংলোতে দিনব্যাপী চলে দর্শনার্থীদের আনাগোনা। আর বিকেলে শিশু-কিশোরদের খেলাধুলা এবং রাত হলেই মাদকসেবীদের আড্ডাখানা ছাড়াও অসামাজিক কর্মকান্ডসহ নানা অপরাধের অভয়ারণ্যে রূপ নিয়েছে বলে অভিযোগ স্থানীয়দের। সরেজমিনে ঘুরে স্থানীয় ও দর্শনার্থীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের পাশে কালিয়াকৈর উপজেলার মৌচাক তেলিরচালা এলাকায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছোট বোন শেখ রেহানার বিলাশ বহুল বাংলো। চারপাশে সীমানা প্রাচীর ঘেরা বাংলোটি ডুপ্লেক্স, শান বাঁধানো পুকুরঘাট, বাগানসহ নান্দনিক ও প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ভরপুর। প্রতি বছর শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানা এখানে সময় কাটাতে আসতেন। চলতি বছরও তারা এ বাংলোতে এসেছিলেন। এছাড়াও সাবেক মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ. ক. ম মোজাম্মেল হকসহ ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা ওই বাংলোতে জরুরি সভা করতেন। মাঝে মধ্যেই রাতে জাতীয় পতাকা লাগানো কালো গøাসের গাড়ি ঢুকতো। তখন বাংলোর চারপাশে আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর কঠোর নজরদারি থাকতো। কখনো ভোরেই গাড়িগুলো চলে যেত, কখনো দু-এক দিন থাকতেন তারা। অপরদিকে সর্বক্ষণ নিরাপত্তাকর্মী দ্বারা রক্ষিত থাকায় বাংলোতে এক সময় সাধারণ মানুষের প্রবেশ ছিল কল্পনাতীত। কিন্তু গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা পদত্যাগ করে দেশ ছেড়ে যাওয়ার পরেই বাংলোটিতে হামলা করে দুর্বৃত্তরা। বাংলোতে ঢুকে ভাংচুরের পাশাপাশি আগুন জ¦ালিয়ে পুড়িয়ে দেয় ফাইলপত্রসহ বিভিন্ন মালামাল। লুট করে নেয় টিভি, ফ্যান, এসি, ফ্রিজ, টাকা, আসবাবপত্র, বৈদ্যুতিক তার, দুটি গেইটসহ বিভিন্ন মালামাল। সব ছোটখাটো স্থাপনাও নষ্ট করে ফেলে দুর্বৃত্তরা। এরপর থেকে ওই বাংলোটি অরক্ষিত রয়েছে। বাংলোর দেয়াল ঘেঁষে গড়ে উঠেছে বেশ কয়েকটি ছোট মনোহরি দোকান। কোনো গেট নেই, নেই পাহারাদাররাও। ভেতরে প্রবেশ করতেই দেখা যায় গেইটের ভেতরে পশ্চিমপাশে চোখে পড়ে ঝোপঝাড়ে ফেনসিডিলের খালি বোতল। পাশের সিকিউটিরি কক্ষে মিলে যৌন উত্তেজকের বিভিন্ন উপদানসহ অসামাজিক কর্মকান্ডের নমুনা। আরেকটু সামনে বিশাল বিলাশবহুল বাংলোর দেখা মিলল। বাংলোটি সম্পূর্ণ পোড়া। প্রতিটি কক্ষে পোড়া চিহ্ন, দরজা জানালা, আসবাবপত্রসহ কোনো মালামাল নেই। দোতলায় দিনের বেলাতেও কয়েকজন যুবক গাঁজা সেবন করছেন। তার দুর্গগ্ধে দিশেহারা দর্শনার্থীরাও। সেখানে বেশ কয়েকজন মাদকাসক্ত যুবক এসব বিষয়ে সংবাদ প্রচার থেকে বিরত থাকতে বলেন। ওই বাংলোর পশ্চিমে সুইমিং পুল ও সামনে দক্ষিণে শান বাঁধানো পুকুর। কয়েকজন শিশু-কিশোর পুকুরের সিড়িতে বসে গল্প করছেন। বিকেল হলেই পুকুরের পশ্চিম পাশে মাঠে শিশু-কিশোর ও যুবকরা ক্রিকেট ও ফুটবল খেলাধুলা করে। বাংলোর দক্ষিণ পাশের বাউন্ডারী ভেঙ্গে কয়েকটি ফুটো করেছে দুবৃত্তরা। মহাসড়ক থেকে সরাসরি বাংলোর ভেতরে ফুটো দিয়ে চলাচল করছেন স্থানীয়রা। দিনব্যাপী দর্শনার্থীর আনাগোনা ও স্থানীয়দের চলাচলের কারণে কিছুটা শান্ত অরক্ষিত বাংলোটি। কিন্তু রাঁত নামলেই ভয়ংকর হয়ে উঠে ওই বাংলো এলাকা। স্থানীয়দের অভিযোগ, রাতে হলেই বাংলোতে মাদকসেবীদের আড্ডাখানা ছাড়াও অসামাজিক কর্মকান্ডসহ নানা অপরাধ সংঘঠিত হচ্ছে। তবে মাদকসেবীদের আড্ডাসহ বিভিন্ন অপরাধ রোধে ওই বাংলো এলাকায় প্রশাসনের নজরদারী জোরদারের দাবী জানিয়েছেন স্থানীয়রা। কালিয়াকৈর থানাধীন মৌচাক ফাড়ি পুলিশের ইনচার্জ (ওসি) মহিদুল ইসলাম জানান, ওই বাংলোটি অরক্ষিত অবস্থায় পড়ে আছে। এভাবে পরিত্যক্ত পড়ে থাকলে বিভিন্ন ঘটনা ঘটতে পারে। তাই এটা এভাবে ফেলে রাখা যাবে না। এটাকে সংরক্ষণের ব্যবস্থা করে নিরাপত্তা দিলে এরকম ঘটনা ঘটবে না। তবে মাদক রোধসহ নানা অপরাধ ঠেকাতে আমাদের পুলিশ টহল অব্যাহত আছে। স্থানীয় জাহাঙ্গীর আলম, দিদার হোসেন ও পোশাক শ্রমিক জিহাদ রহমান বলেন, এ বাংলো অরক্ষিত থাকায় দিনব্যাপী দর্শনার্থী আসে ও স্থানীয়রা বাউন্ডারী ভাঙ্গা ফুটো দিয়ে চলাচল করে। কিন্তু রাতের বেলায় এখানে ঢুকতে ভয় করে। কারণ তখন এখানে মাদকসেবীদের আড্ডা ও অসামাজিক কর্মকান্ডসহ নানা অপরাধ সংঘঠিত হয়। দর্শনার্থী লাবু মিয়া ও মমিন আলী বলেন, এখানে অনেক জায়গা এবং সুন্দর। এজন্য এখানে দূর-দূরান্ত থেকে অনেক মানুষ ঘুরতে আসেন। কেউ কেউ খেলাধুলা করে, কেউ কেউ আড্ডা দেয়। তবে এটা রক্ষিত হলে এখানে গাঁজা, মদ, ইয়াবাসহ বিভিন্ন মাদকসেবীরা আড্ডা দিতে পারতো না। মিলন হোসেন, কিবরিয়া ও দ্বিতীয় শ্রেনীতে পড়–য়া নুর হোসেন বলেন, এ এলাকাটি কারখানায় ঘেরা ও তেমন কোনো মাঠ নেই। তাই প্রতিদিন বিকেলে শিশু-কিশোর, যুবকরা ক্রিটেক ও ফুটবল খেলাধুলা করে। তবে মাদকসেবীদের আড্ডাসহ বিভিন্ন অপরাধ রোধে ওই বাংলোটি সরকারের অধীনে নিয়ে প্রশাসনের নজরদারীর জোরদারের দাবী স্থানীয়দের।

Facebook Comments Box
এই ক্যাটাগরির আরও খবর