মোঃ আশরাফ ইকবাল পিকলু মাজমাদার
কুষ্টিয়া জেলা প্রতিনিধি।
(তানভীর চৌধুরী গণমাধ্যম কর্মী)
“জাতীয় ঐক্য” বা “জাতীয় সরকার” গঠনের সম্ভাবনা নিয়ে যে আলোচনা চলছে, তা বাংলাদেশের বর্তমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
এটি মূলত দেশের রাজনৈতিক অস্থিরতা, বিশ্বাস সংকট, এবং সুষ্ঠু নির্বাচনের দাবি পূরণের জন্য একটি সমাধান হিসেবে বিবেচিত হতে পারে।
বাংলাদেশের চলমান রাজনৈতিক ও সামাজিক পরিস্থিতি অত্যন্ত জটিল ও সংবেদনশীল। বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস জাতীয় ঐক্যের ডাক দিয়ে রাজনৈতিক দল এবং ধর্মীয় নেতাদের সঙ্গে সংলাপে বসতে যাচ্ছেন। এ উদ্যোগ দেশের ভেতরে ও বাইরে বিদ্যমান উত্তেজনা কমিয়ে স্থিতিশীলতা প্রতিষ্ঠায় ভূমিকা রাখতে পারে।
বড় রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে সংঘাত এবং সহিংসতার পরিবেশ জাতিকে এক ধরনের অচলাবস্থার দিকে ঠেলে দিয়েছে। একটি নিরপেক্ষ ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন আয়োজনে জাতীয় ঐক্যের প্রয়োজনীয়তা অনুভূত হচ্ছে। গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার প্রতি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের চাপও এ ধরনের আলোচনায় প্রভাব ফেলছে।
প্রধান উপদেষ্টার বক্তব্য থেকে বোঝা যায়, সংবাদমাধ্যমে ছড়ানো অপতথ্য এবং দেশের অভ্যন্তরীণ ঐক্য বিনষ্টকারী অপপ্রচার মোকাবিলা করাই এই সংলাপের মূল লক্ষ্য। বিশেষ করে ভারতের গণমাধ্যমের আক্রমণাত্মক ভূমিকা এবং বাংলাদেশের সংখ্যালঘু সম্প্রদায় সম্পর্কিত অতিরঞ্জিত তথ্য ছড়ানোর অভিযোগে দুই দেশের মধ্যে সম্পর্কের টানাপোড়েন তৈরি হয়েছে। এ অবস্থায় মুহাম্মদ ইউনূস একদিকে জাতীয় ঐক্য ধরে রাখার এবং অন্যদিকে দেশের ভাবমূর্তি রক্ষার চেষ্টা করছেন।
জাতীয় সরকারে সব বড় রাজনৈতিক দলের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে হবে। সরকারের দায়িত্ব হবে একটি সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ, এবং গ্রহণযোগ্য নির্বাচন আয়োজন করা। নির্বাচন প্রক্রিয়া পরিচালনার জন্য স্বাধীন এবং শক্তিশালী একটি নির্বাচন কমিশন গঠন। এ ধরনের সরকারের কার্যক্রম অবশ্যই সংবিধানের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ হতে হবে।
প্রধান দলগুলোর মধ্যে পারস্পরিক আস্থা তৈরির চ্যালেঞ্জ। জাতীয় সরকারের ক্ষমতা কীভাবে ভাগ হবে, তা নিয়ে মতানৈক্য হতে পারে। জনগণের প্রত্যাশা ও সমর্থন পাওয়া গুরুত্বপূর্ণ। জাতীয় সরকার গঠনের আলোচনা এখনো প্রাথমিক পর্যায়ে থাকলে এর সাফল্য নির্ভর করবে দলগুলোর আন্তরিকতা এবং ঐক্যমতের ওপর। জনগণের আশা, এই উদ্যোগ দেশকে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতার দিকে নিয়ে যাবে।