রহিদুল ইসলাম, স্টাফ রিপোর্টার, রাজশাহীঃ
আমাদের জন্মও পরিসংখ্যান দিয়ে, মৃত্যও পরিসংখ্যান দিয়ে। যেদিন মানবসভ্যতা শুরু হয়েছে সেদিন থেকেই পরিসংখ্যান চলছে বলে মন্তব্য করেছেন পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের পরিসংখ্যান ও তথ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের সচিব ড. শাহনাজ আরেফিন।
আজ বুধবার (২৭ সেপ্টেম্বর) দুপুরে রাজশাহী বিভাগীয় কমিশনার কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে একটি ওয়ার্কশপে পরিসংখ্যানের গুরুত্বারোপ করতে গিয়ে তিনি এসব বলেন।
বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো ‘জাতীয় পরিসংখ্যান উন্নয়ন কৌশলপত্র সংশোধন ও হালনাগাদকরণ’ শীর্ষক রাজশাহী বিভাগীয় স্টেকহোল্ডার কনসালটেশন ওয়ার্কশপের আয়োজন করে।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে ড. শাহনাজ আরেফিন বলেন, সকালে ঘুম থেকে ওঠা থেকে শুরু করে মৃত্যু পর্যন্ত কোন জায়গায় পরিসংখ্যান নেই? কবে জন্মগ্রহণ করলাম, সময়টা কখন ছিল, দিনটা কেমন ছিল সবই পরিসংখ্যান। আবার মৃত্যুটা যে হলো সেটা কোন দিন, কোন সময় ছিল সবই পরিসংখ্যান। পাকিস্তানীদের সাথে আমরা থাকি নি কারণ সেখানে বঞ্চনা ছিল। নয়টা মাস সেক্রিফাইস করে আজকে আমরা একটা স্বাধীন দেশ পেয়েছি। এই স্বাধীনতাকে ধরে রাখতে আমাদের স্বপ্ন দেখতে হচ্ছে। ১৯৭১ সালের বাংলার বিভাগ বা মন্ত্রনালয়ের কোনো সেক্টরের সাথে এখন মেলানো যাবে না।
সচিব আরও বলেন, পরিসংখ্যানের প্রথম কাজ হচ্ছে দেখিয়ে দেওয়া যে আমরা কোথায় আছি, পরবর্তী কাজ স্বপ্ন দেখানো যে আমরা কোথায় যেতে চাই। কোন পদ্ধতিতে সেখানে যেতে পারবো সেটার একটা প্রস্তাবনা যারা রাষ্ট্র চালান তাদের কাছে তুলে ধরা। আমরা পরিবর্তনশীল সমাজে বাস করছি।
প্রত্যেকটা বিভাগ তার নিজস্ব প্রয়োজনে পরিসংখ্যান করে থাকে। চাল উৎপাদন কৃষি মন্ত্রণালয়ের পরিসংখ্যান দেশের মানুষ জনের জন্য। আর বিবিএস’র পরিসংখ্যানটা আন্তর্জাতিক উদ্দেশ্যে সফল করার জন্য। দুটোর লক্ষ্য আলাদা, উদ্দেশ্য আলাদা, তবে বিষয়বস্তু অভিন্ন। সেই কারণে যদি মিলিয়ে দেখবার চেষ্টা করি কবে হবে না, হওয়ার কথাও না। তবে ক্ষেত্রবিশেষে এক হতেও পারে। যেমন- পরিবেশ মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ব্যাংকের সাথে মিলেছে। একদিন না একদিন হয়ে যাবে বলেও আশাবাদ ব্যক্ত করেন এই সরকারি কর্মকর্তা।
এসময় বক্তারা তৃণমূলের উৎপাদন পরিসংখ্যানের সাথে জাতীয় পর্যায়ের উৎপাদন পরিসংখ্যানের সামঞ্জস্য রাখা, শ্রেণি-পেশা ভিত্তিক মাথাপিছু আয় নির্ণয়ের উপর দৃষ্টি আকর্ষণ করেন।
বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর মহাপরিচালক মতিয়ার রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন রাজশাহী বিভাগীয় কমিশনার ড. দেওয়ান মুহাম্মদ হুমায়ূন কবীর, রাজশাহী রেঞ্জের অতিরিক্ত ডিআইজি (অর্থ ও প্রশাসন) রশিদুল হাসান, রাজশাহী জেলা প্রশাসক শামীম আহমেদ।
কর্মশালায় পাওয়ার পয়েন্ট প্রেজেন্টশন করেন বিশ্বব্যাংকের সিনিয়র অর্থনীতিবিদ আয়েগো আম্বলি। এ সময় বিভাগীয় পর্যায়ের বিভিন্ন সরকারী দপ্তরের কর্মকর্তা, বিভাগের সকল জেলা প্রশাসনের প্রতিনিধি ও কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি ও পরিসংখ্যান বিভাগের শিক্ষকরা উপস্থিত ছিলেন।