মোঃ আশরাফ ইকবাল পিকলু মাজমাদার
কুষ্টিয়া জেলা প্রতিনিধি।
কুষ্টিয়া শহরের মিউনিসিপাল বাজার,বড়বাজার, রাজারহাট, সাদ্দাম বাজার, মঙ্গলবাড়িয়া বাজার, ত্রিমোহনী বাজার, মোল্লাতেঘড়িয়া বাজার, লাহিনী বটতলা বাজার ঘুরে দেখা যায় শীতের আগমনে সবজির বাজার অনেকটা স্বাভাবিক। বেশ কিছু দিন ধরেই সবজির বাজার অস্থিতিশীল। শুক্রবার (৬ ডিসেম্বর) সকাল থেকে কুষ্টিয়ার বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা যায়, বাজারে বেশ কিছু সবজির দাম কমেছে। বাজারে সবজির দাম কমলেও সাধারণ ক্রেতারা হিমশিম খাচ্ছেন সবজি ক্রয় করতে। বাজারে নতুন আলু ৮০-৯০ টাকা, ভারতীয় টমেটো ১২০ টাকা, টক টমেটো ১১০ টাকা, কাঁচা টমেটো ৬০ টাকা, চায়না গাজর ১১০ টাকা, শিম ৬০ টাকা, লম্বা বেগুন ৪০-৫০ টাকা, সাদা গোল বেগুন ৫০-৬০ টাকা, কালো গোল বেগুন ৬০-৭০ টাকা, শসা ৫০-৬০ টাকা, করলা ৮০ টাকা, পেঁপে ৩০-৪০ টাকা, মুলা ৩০-৪০ টাকা, ঢ্যাঁড়শ ৭০-৮০ টাকা, পটোল ৪০-৫০ টাকা, চিচিঙ্গা ৫০ টাকা, ধুন্দল ৫০-৬০ টাকা, ঝিঙা ৬০-৭০ টাকা, বরবটি ৭০-৮০ টাকা, কচুরলতি ৫০-৬০ টাকা, কচুরমুখী ৬০-৭০ টাকা, মিষ্টিকুমড়া ৪০ -৫০ টাকা, কাঁচামরিচ ৮০- ৯০ টাকা, ধনেপাতা ১০০ -১২০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়। আর মানভেদে প্রতিটি লাউ ৩০-৬০ টাকা, চাল কুমড়া ৪০-৬০ টাকা, ফুলকপি ৫০ টাকা, বাঁধাকপি ৫০ টাকা করে বিক্রি হয়। এছাড়া প্রতি হালি কাঁচাকলা ১৫-৩০ টাকা, এক হালি লেবু বিক্রি হয় ১৫-৩০ টাকা করে। গত সপ্তাহের সঙ্গে তুলনায় প্রতি কেজিতে নতুন আলু দাম কমেছে ১০-২০ টাকা। এছাড়া চায়না গাজরের দাম ২০ টাকা, শিমের দাম ৪০ টাকা, সাদা গোল বেগুনে ১০-২০ টাকা, কালো গোল বেগুনের দাম ১০-২০ টাকা, মুলার দাম ১০-৩০ টাকা, পটোলের (দেশি) দাম ২০-৩০ টাকা, চিচিঙ্গার দাম ২০ টাকা, ধুন্দলের দাম ২০-৩০ টাকা, ঝিঙার দাম ২০-৩০ টাকা, মিষ্টিকুমড়ার দাম ১০-২০ টাকা, ফুলকপি ও বাঁধাকপির দাম ২০-৩০ টাকা কমেছে। এছাড়া প্রতি কেজিতে ভারতীয় টমেটোর দাম কমছে ১০-২০ টাকা। পেঁপে ১০-২০ টাকা, ঢ্যাঁড়শ ২০-৪০ টাকা এবং ঝিঙার দাম ২০ -৩০ টাকা কমেছে। এছাড়া অন্যান্য সবজির দাম অপরিবর্তিত । সবজি বিক্রেতা বাবু লাল বলেন, ‘সব সবজির দামই কমেছে। শীতের সময় চলে আসছে, বাজারে সবজিও বাড়ছে। তাই সামনে সবজির দাম আরও কমবে।’ এদিকে বাজার করতে আসা ক্রেতা সামিত বলেন, ‘অনেক সবজির দাম কমেছে এটা সত্যি। তবে আরও দাম কমতে হবে। এই দাম সবার জন্য স্বস্তিদায়ক এটা এখনও বলা যায় না।’ আলু, পেঁয়াজ, আদা, রসুনের দাম অপরিবর্তিত । তবে বিক্রেতারা জানান, বাজারে নতুন পেঁয়াজ (গাছসহ পেঁয়াজ) আসতে শুরু করেছে। কিছু দিনের মধ্যেই পেঁয়াজের দাম আরও কমে আসবে। বাজারে আকার ও মানভেদে ক্রস জাতের পেঁয়াজ বিক্রি হয় ৮০-১১০ টাকায়। এর মধ্যে ছোট পেঁয়াজ ৯০ টাকা ও বড় সাইজের পেঁয়াজ ১১০ টাকা দরে বিক্রি হয়। মানভেদে দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হয় ১১০ টাকা, ভারতীয় পেঁয়াজ ৭০-৯০ টাকা করে। এছাড়া লাল আলু ৭০ টাকা, সাদা আলু ৭৫ টাকা, বগুড়ার আলু ৮০ টাকা, দেশি রসুন ২২০-২৪০ টাকা, চায়না রসুন ২২০ টাকা, চায়না আদা ২১০ টাকা, নতুন ভারতীয় আদা ৮০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়। বাজারে গরুর মাংস বিক্রি হচ্ছে ৬৫০-৭৫০ টাকা কেজি দরে। খাসির মাংস বিক্রি হয় ১ হাজার ১০০ টাকা কেজিতে। ব্রয়লার মুরগির কেজি ১৬০-১৭৫ টাকা, কক মুরগি ২৬০-২৮০ টাকা, লেয়ার মুরগি ২৬০ টাকা, দেশি মুরগি ৪৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়। ফার্মের মুরগির প্রতি ডজন লাল ডিম ১৪০ টাকা এবং সাদা ডিম বিক্রি হয় ১৩৫ টাকা।ব্রয়লার মুরগির দাম কমেছে কেজিতে পাঁচ টাকা। কক মুরগির দাম কমেছে পাঁচ থেকে দশ টাকা। এছাড়া গরুর মাংস, খাসির মাংস, দেশি মুরগি ও লেয়ার মুরগির দাম ছিল অপরিবর্তিত। এছাড়া ফার্মের মুরগির লাল ও সাদা ডিমের দাম কমেছে ডজনে পাঁচ টাকা করে।এছাড়া বাজারে আকার ও ওজন অনুযায়ী ইলিশ মাছ ৭০০-২২০০ টাকা, রুই ২৭০-৪৫০ টাকা, কাতল ৩০০-৫০০ টাকা, কালিবাউশ ৪০০-৭০০ টাকা, চিংড়ি ৭০০-১২০০ টাকা, কাঁচকি ৪০০ টাকা, কৈ ২০০-৬০০ টাকা, পাবদা ৪০০-৮০০ টাকা, শিং ৩০০-৮০০ টাকা, টেংরা ৪০০-৮০০ টাকা, বোয়াল ৫০০-৯০০ টাকা, শোল মাছ ৫০০-৮০০ টাকা, চিতল মাছ ৪০০-১০০০ টাকা, সরপুঁটি ১৮০-৫০০ টাকা, রূপচাঁদা মাছ ৬০০-১০০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়। মুদিপণ্যের দাম অপরিবর্তিত থাকলেও কমেছে চিনির দাম। তবে খোলা সয়াবিন ও খোলা সরিষার তেলের দাম বেড়েছে। ছোট মসুর ডাল ১৩৫ টাকা, মোটা মসুর ডাল ১১০ টাকা, বড় মুগ ডাল ১৪০ টাকা, ছোট মুগ ডাল ১৭০ টাকা, খেসারি ডাল ১১০ টাকা, বুটের ডাল ১৪৫ টাকা, মাষকলাই ডাল ১৮০ টাকা, ডাবলি ৭৫ টাকা, ছোলা ১৩০ টাকা, প্যাকেট পোলাও চাল ১৫০ টাকা, খোলা পোলাও চাল মানভেদে ১১০-১৪০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। আর প্রতি লিটার বোতলজাত সয়াবিন তেল ১৬৭ টাকা, খোলা সয়াবিন তেল ১৬৮ টাকা, প্যাকেটজাত চিনি ১২৫ টাকা, খোলা চিনি ১২৫ টাকা, দুই কেজি প্যাকেট ময়দা ১৫০ টাকা, আটা দুই কেজির প্যাকেট ১১৫ টাকা, খোলা সরিষার তেল প্রতি লিটার ১৯০ টাকায় বিক্রি হয়। তবে প্যাকেটজাত ও খোলা চিনির দাম কমেছে কেজিতে পাঁচ টাকা করে। তবে বাজার মনিটরিং সঠিকভাবে করা গেলে সবজির দাম আরো কমবে বলে ক্রেতাদের প্রত্যাশা। সবজির দাম কমলেও ক্রেতাদের বাজার করতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। কারণ আয় এবং ব্যয়ের ভারসাম্য এখনো সঠিক হয়নি।