সরকার মাজহারুল ইসলাম গাজীপুর জেলা, প্রতিনিধি
গাজীপুরের কালিয়াকৈরে ছাত্রলীগ নেতা আল আমিনকে প্রকাশ্য দিবালোকে কুপিয়ে হত্যার ৬ দিনের মাথায় আবারও প্রকাশ্যে কুপাকুপির ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় উভয় গ্রুপে চারজন আহত হয়েছে। পরে ৯৯৯-এ ফোনে দুজনকে আটক করেছে পুলিশ। গতকাল মঙ্গলবার ডিস লাইনের ব্যবসার টাকা বন্টনকে কেন্দ্র করে উপজেলার পূর্বচান্দরা এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
আটককৃতরা হলেন- কালিয়াকৈর উপজেলার চান্দরা এলাকার সরবেশের ছেলে আশিকুজ্জামান বকুল (৪০)। তিনি কালিয়াকৈর পৌরসভার ৭নং ওয়ার্ড যুবলীগের সহ-সভাপতি। অপরজন হলেন, গাজীপুর সদর উপজেলার বিপ্রবার্থা এলাকার পারভেজ দেওয়ানের ছেলে সুমন দেওয়ান (২০)।
এলাকাবাসী, পরিবার ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, কালিয়াকৈর উপজেলার পূর্বচান্দরা এলাকায় দীর্ঘদিন ধরে জাকির হোসেন, মহসিন মিয়া ও আশিকুজ্জামান বকুল মিলে থ্রী-স্টার ডিজিটাল ক্যাবল নেটওয়ার্ক নামে পার্টনারশীপে ডিস লাইন ব্যবসা পরিচালনা করে আসছিল। এরা সকলেই স্থানীয় আওয়ামীলীগ ও যুবলীগের নেতাকর্মী। কিন্তু কিছু দিন আগে আশিকুজ্জামান বকুলকে ওই ব্যবসার পার্টনারশীপ থেকে বাদ দেওয়া হয়। তারপরও তাদের ওই পার্টনারশীপ ব্যবসায় লেনদেন বিষয়টি সম্পূর্ণ সমাধান হয়নি। এ নিয়ে দু-গ্রুপের মধ্যে বিরোধ চলে আসছিল। এর জেরে মঙ্গলবার সকাল ১০টার দিকে কালিয়াকৈর পৌরসভার ৭নং ওয়ার্ড যুবলীগের সহ সভাপতি আশিকুজ্জামান বকুল ও তার স্বজন সুমন দেওয়ান দেশীয় অস্ত্র নিয়ে পার্টনার মহসিনের ওপর হামলা করে। তারা এলোপাথারীভাবে ওই ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের শ্রমবিষয়ক সম্পাদক মহসিন মিয়া ও তার শ্যালক নাইম দেওয়ানকে প্রকাশ্যে কুপিয়ে আহত করে। এসময় উপস্থিত জনতা হামলাকারী আশিকুজ্জামান ও তার স্বজন সুমনকে গণধোলাই দিয়ে ৯৯৯-এ ফোন করে। পরে গুরুতর আহত অবস্থায় মহসিন ও নাইমকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান এলাকাবাসী। সেখানে অবস্থার অবনতি হলে আশঙ্কাজনক অবস্থায় মহসিনকে শেখ ফজিলাতুন নেছা মজিব কেপিজে মেমোরিয়াল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। বর্তমানে তিনি ওই হাসপাতালের আইসিওতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আছেন। এদিকে ৯৯৯-এ ফোনে খবর পেয়ে কালিয়াকৈর থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে আশিকুজ্জামান বকুল ও তার স্বজন সুমন দেওয়ানকে আটক করে। এসময় ঘটনাস্থল থেকে ধারালো একটি চাইনিজ কুড়াল ও চাপাতি উদ্ধার করে পুলিশ। পরে আটককৃতদেরও পুলিশ পাহারায় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়। এ ঘটনায় অপর পার্টনার জাকির হোসেন বাদী হয়ে আশিকুজ্জামান বকুল ও সুমন দেওয়ানের নাম উল্লেখ করে কালিয়াকৈর থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেন। আশঙ্কাজক মহসিন মিয়া (৪০) কালিয়াকৈর উপজেলার চান্দরা এলাকার মৃত ফজলু মিয়ার ছেলে।
এর ৬দিন আগে গত ৫ মে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু সরকারী কলেজের ডিগ্রী প্রথম বর্ষের ছাত্র ও দ্বাদশ শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি আল আমিন হোসাইনকে(১৯) প্রকাশ্যে কুপিয়ে হত্যা করে সংগঠনের একপক্ষের নেতাকর্মীরা। তিনি উপজেলার বরিয়াবহ এলাকার মোতালেব হোসেনের ছেলে। এ নৃশংস হত্যাকান্ডের ঘটনায় কালিয়াকৈর পৌরসভার ৬নং ওয়ার্ড ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মিলনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। তিনি উপজেলার কালামপুর এলাকার মোতালেব মিয়ার ছেলে। এ হত্যাকান্ডের বাকী আসামীরা পলাতক রয়েছে।
কালিয়াকৈর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এ এফ এম নাসিম জানান, চান্দরা এলাকায় কুপিয়ে আহতের ঘটনায় দুজনকে আটক করা হয়েছে। এ ঘটনায় থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। এছাড়া ছাত্রলীগ নেতা আল আমিন হত্যাকান্ডের ঘটনায় একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তবে বাকী আসামীদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।
### 11/06/2024