সরকার মাজহারুল ইসলাম গাজীপুর জেলা প্রতিনিধি
গাজীপুরের কালিয়াকৈরে ক্ষমতার অপব্যবহার করে এক স্কুল এন্ড কলেজের অধ্যক্ষের চেয়ার দখলের চেষ্টায় মরিয়া হয়ে উঠেছেন সাবেক অধ্যক্ষ। ওই প্রতিষ্ঠানের সভাপতিকে দিয়ে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষকে লাঞ্ছিত করার অভিযোগ উঠেছে। গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে উপজেলার বড়ইবাড়ী এলাকায় একটি স্কুল এন্ড কলেজে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় ওই শিক্ষা-প্রতিষ্ঠানের প্রঙ্গণ উত্তাপ্ত হয়ে উঠেছে।
এলাকাবাসী, শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, কালিয়াকৈর উপজেলার বড়ইবাড়ী এলাকায় স্থাপিত বড়ইবাড়ী এ কে ইউ ইনষ্টিটিউশন এন্ড কলেজ। এটি একটি ঐতিহ্যবাহী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। গত ২০২১সালে ওই প্রতিষ্ঠানের সাবেক অধ্যক্ষ সোলাইমান সিকদারকে নানা অনিয়মের অভিযোগে অব্যাহতি দিয়েছে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। নানা অনিয়মের কারণে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রীর নির্দেশে তাকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। এরপর ওই প্রতিষ্ঠানের সিনিয়র শিক্ষক সুশিল চন্দ্র সরকারকে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ হিসেবে নিয়োগ করা হয়। তিনি তার দক্ষতা ও বিচক্ষনতা দিয়ে সুন্দর ভাবে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটি চালিয়ে আসছিলেন। কিন্তু এটা স্কুল অ্যান্ড কলেজটি প্রতিষ্ঠিত করেছেন সিকদার পরিবার। সে সুবাধে ওই পরিবারের কেউ না কেউ ওই প্রতিষ্ঠানের সভাপতি ও প্রধান শিক্ষকের চেয়ারে বসে দায়িত্ব পালন করে থাকেন। ফলে নিজের পরিবারের প্রতিষ্ঠানটি প্রতিষ্ঠিত হওয়ায় নানা ভাবে ক্ষমতা দেখানোর চেষ্টা করছেন সাবেক অধ্যক্ষ সুলাইমান। এমন কি পারিবারিক ক্ষমতার বলে বিভিন্ন সময় প্রতিষ্ঠানের উন্নয়ন কাজে বাধাগ্রস্থ করে আসছিলেন এ সাবেক অধ্যক্ষ। এর ধারাবাহিকতায় গত সোমবার সকালে সাবেক অধ্যক্ষ ওই প্রতিষ্ঠানে গিয়ে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষকে শাসান। গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে তিনি ও ম্যানেজিং কমিটির সভাপতিকে নিয়ে ওই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যান এবং সাবেক অধ্যক্ষকে বহাল করতে বলেন। এসময় তারা ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষকে লাঞ্ছিত করে প্রতিষ্ঠান থেকে বের করে দেওয়ার চেষ্টা করেন। এ নিয়ে উভয় পক্ষ উত্তেজিত হলে শিক্ষা-প্রতিষ্ঠান প্রঙ্গণ উত্তাপ্ত হয়ে উঠলে পুলিশে খবর দেয় এলাকাবাসী। খবর পেয়ে কালিয়াকৈর থানার এসআই ফেন্সি বিশ্বাস জুয়েলের নেতৃত্বে পুলিশের একটি টিম ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন। এ বিষয়ে জানতে প্রতিষ্ঠানের সভাপতি মুসফিকুর রহমান নিকুর মুঠোফোনে একাধিকবার ফোন দিলেও তিনি ধরেননি।
ওই প্রতিষ্ঠানের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ সুশিল চন্দ্র সরকার জানান, জোর করে সাবেক অধ্যক্ষকে বহাল করতে বলা হয়। এটা তো আমি পারি না। এটা বেআইনি হবে। তাদের কথা মতো না করায় আমাকে লাঞ্ছিত করে। পুলিশ আমাকে উদ্ধার করে বাড়িতে পৌঁছে দিয়েছে। আমি এখন আতঙ্কে আছি।
সাবেক অধ্যক্ষ সুলাইমান সিকদার জানান, আমাকে পূর্বের স্বপদে বহালের জন্য আদালতের একটা রায় ও বোর্ডের একটা চিঠি আছে। এছাড়াও বকেয়া বেতন-ভাতা দেওয়ার জন্য ১০কার্য দিবসের মধ্যে চিঠি দিতে বলা হয়েছে। তিন মাস বাস্তবায়ন হয়ে গেলেও এটা কার্যক্রম করা হচ্ছে না। আজকে মিটিং চলাকালিন সময়ে ঢুকে বিষয়টি জানতে চাইলাম। পরে এটা নিয়ে উত্তেজিত হয়ে উঠলে পুলিশ এসে নিয়ন্ত্রণ করে।
কালিয়াকৈর থানার এসআই ফেন্সি জুয়েল জানান, মারধরের কোন ঘটনা নয়নি। ওই প্রতিষ্ঠানের ম্যানেজিং কমিটি আলোচনায় করে। হঠাৎ দুই পক্ষ উত্তেজিত হয়ে উঠার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করা হয়েছে। এসময় পক্ষদ্বয়কে তাদের মন্ত্রণালয় থেকে নির্দেশনা নিয়ে আসতে বলা হয়।
কালিয়াকৈর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এ এফ এম নাসিম জানান, ওই শিক্ষা-প্রতিষ্ঠানে দুই পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করছিল। স্থানীয়রা জানালে, পুলিশ পাঠিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা হয়েছে। তবে এ বিষয়ে এখনো কোনো অভিযোগ পাওয়া যায়নি।
###
কালিয়াকৈর প্রতিনিধি
তারিখ- ১৪.০৩.২০২৪ইং
মুঠোফোন- ০১৭২০৬২৭৪৮০
(ছবি লাগবে)