মোঃ আশরাফ ইকবাল পিকলু মাজমাদার
কুষ্টিয়া জেলা প্রতিনিধি ।।
কাল্পনিক কোন গল্প নয় এটি ।
ইরানের সাবেক প্রেসিডেন্ট আহাম্মদী নেজাত উনাকে যদি চিনে থাকেন তাহলে আপনি চাইলেই তাঁর গল্পের সত্যতা যাচাই করতে পারবেন ।
কারন আমি ওনাকে ভালোমতো চিনি, উনি একজন কৃষকের সন্তান উনার বাড়ির পাশেই কুষ্টিয়া জেলার একটি ছেলে বিবাহ করেছেন, ইরানি মেয়েকে আমি দশ বছর ইরানে ছিলাম । একবার এক কোরবানি ঈদে কুষ্টিয়ার ছেলেটির শ্বশুর বাড়িতে গিয়েছিলাম । চার দিন ওই বাড়িতে ছিলাম ওই বাড়ীর পাশেই আহাম্মদী নেজাত এর বাড়ি, খুবই সাধারণভাবে উনি চলাফেরা করেন ।
বিশ্বের অন্যতম শক্তিধর এবং সম্পদশালী একটি দেশের দুই মেয়াদে প্রেসিডেন্ট ছিলেন ! বর্তমানে তিনি স্বেচ্ছায় মেষ পালন করেন। সাবেক প্রেসিডেন্ট হিসেবে প্রাপ্য ভাতা (প্রতি মাসে) তিনি গ্রহণ না করে দান করে দিয়েছেন! প্রেসিডেন্সীর মেয়াদ শেষ হবার সাথে সাথে ইউনিভার্সিটিতে খণ্ডকালীন শিক্ষকতায় ফিরে যান। তখন তার মাসিক বেতন ছিলো বর্তমান সময়ে আনুমানিক ২৫০ ডলার! এর বাইরে আর কোন আর্থিক সুবিধা পেতেন না, যেহেতু অস্থায়ী টিচার ছিলেন।
ব্যক্তি জীবনে নিম্ন মধ্যবিত্ত পরিবার থেকে উঠে এসেছেন। সিভিলি ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে স্নাতক সম্পন্ন করার পর সেই ইউনিভার্সিটিতে শিক্ষকতা করেন। ডক্টরেট করেন সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং এন্ড ট্র্যাফিক ট্রান্সপোর্ট প্ল্যানিংয়ে। দেশের নগর জীবনের উন্নয়নের জন্য রাজধানীর মেয়র হন। এরপর ব্যাক টু ব্যাক দুই মেয়াদে প্রেসিডেন্ট হয়ে দেশের মৌলিক বিজ্ঞান গবেষণায় বিপ্লব ঘটান তিনি! পরমাণু এবং ধাতব শিল্পে তার দেশ এখন এক্সাম্পল।
এই ব্যাক্তি কোথাও কাজে বা বেড়াতে গেলে সবচেয়ে কমদামী হোটেলের কমদামী রুমে উঠেন। খাট পালঙ্ক ছাড়া রুমে থাকার চেষ্টা করেন। কারণ তাঁর বিশ্বাস যত কম ভোগ বিলাস করবেন তত কম হিসেব দিতে হবে পরকালে! চলাচল করেন বাসে কারণ তাঁর ব্যাক্তিগত পিউজিয়ট গাড়িটি বিক্রি করে দিতে হয়েছে টাকার জন্য। তাঁর স্ত্রী একজন মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার। দুই ছেলে এক মেয়ে! সন্তানদের তিনি কোন রাষ্ট্রীয় সুবিধা ভোগ করতে দেননি!
পরপর দুই মেয়াদে প্রেসিডেন্ট থাকার সুবাধে তিনি চাইলেই, তাঁর দেশের আইনানুযায়ী বৈধভাবে, তাঁর অর্থনৈতিক অবস্থার অনেক অনেক উন্নতি করতে পারতেন। তাঁর দেশের আইনে প্রেসিডেন্ট এবং তাঁর পরিবারের আর্থিক স্বচ্ছলতার জন্য এই টুকু ছাড় জনগণের সম্মতি নিয়েই করা হয়েছে। তবুও তিনি সেটা নেননি ! এ বিষয়ে তাঁকে প্রশ্ন করা হলে তিনি উত্তর দিয়েছিলেন “একজন নেতার জীবনযাপন এমন হওয়া উচিৎ যেমন তাঁর জনগণ যাপন করেন।।