বিভাগীয় ক্রাইম ক্রসপন্ডেন্ট, রংপুরঃ
রংপুর মহানগরীর নিয়ামত পান্ডার দিঘি এলাকায় ষাটোর্ধ্ব বৃদ্ধ নুর ইসলাম ব্যাঙ’র রহস্যজকন মৃত্যু নিয়ে ধূম্রজাল। পুলিশের উপস্থিতিতেই জানাযা। এলাকাবাসীর অভিযোগ তাকে নির্যাতন করে হত্যা করে কাউন্সিলর আশেক আলী ও পুলিশকে মেনেজ করে প্রকৃত ঘটনা ধামাচাপা দেয়ার চেষ্টা করছে নিহত নুর ইসলাম ব্যাঙ’র স্ত্রী সখিনা, ছেলে সুজন ও জামাই শফিকুল মুহুরী।
এলাকাবাসী সুত্রে জানা যায়, গত ২১ জানুয়ারি শুক্রবার সকাল ১০টার দিকে নিহত নুর ইসলাম ব্যাঙ’র সাথে স্ত্রী সখিনা, ছেলে সুজন ড্রাইভার ও জামাই শফিকুল মুহুরীর পারিবারিক বিষয় নিয়ে কথা কাটাকাটি ও ঝগড়ার আওয়াজ শুনা যায়। তাদের ঝগড়ার আওয়াজ শুনে পার্শ্ববর্তী বাড়ির লোকজন এগিয়ে আসলে নুর ইসলাম অসুস্থ বলে কাউকে বাড়িতে ঢুকতে দেয়া হয়নি। এমনকি কাউকে মৃত নুর ইসলাম ব্যাঙ’র লাশও দেখতে দেয়নি তার পরিবার। প্রথমে হার্ট অ্যাটাক হয়ে মারা গেছে বললেও পরে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যার কথা বলছে পরিবারের লোকজন। পুলিশকে না জানিয়ে তড়িঘড়ি করে দাফন করায় বিষয়টি নিয়ে আরও সন্দেহের দানা বেঁধেছে এলাকাবাসীর মধ্যে। হত্যা না কি আত্মহত্যা। বৃদ্ধ নুর ইসলাম ব্যাঙ’র রহস্যজনক মৃত্যু নিয়ে এলাকায় কানাঘুষাসহ নানান প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে এলাকাবাসীর মধ্যে।
ঘটনাটি ঘটেছে নুর ইসলাম ব্যাঙ’র নিজ বাড়ি দাড়ারপার এলাকায়। সেখানে বিষয়টি ধামাচাপা দিতে না পেরে দ্রুত তার লাশ হার্ট অ্যাটাকের কথা বলে মৃত নুর ইসলাম’র শ্যালক তোজার বাড়িতে নিয়ে গিয়ে মৃতের গোসল ও দাফন সম্পন্ন করা হয়েছে। লাশ না দেখতে দেয়া, হার্ট অ্যাটাকের কথা বলে মেডিকেলে নিয়ে তরিঘরি করে লাশ অন্যত্র নিয়ে গিয়ে লাশের গোসল ও দাফন করা, পুলিশ ও কাউন্সিলর আশেক আলীর রহস্যজনক ভূমিকা নিয়ে এলাকাবাসীর মধ্যে চাপা ক্ষোভ।
তবে বৃদ্ধার মৃত্যুর ঘটনায় এলাকার বিভিন্ন দোকান, ঘরবাড়িতে ও স্থানীয় লোকদের মাঝে ব্যাপক গুঞ্জন শোনা যাচ্ছে। বৃদ্ধ নুর ইসলাম ব্যাঙ কে হত্যা করে ঘরের আরার সাথে ঝুলিয়ে রেখেছে বলে অনেকেই মন্তব্য করেছেন।
নিহতের জামাই শফিকুল মুহুরীর সাথে মুঠোফোনে কথা হলে বলেন তার শশুর নুর ইসলাম আত্মহত্যা করেছেন পুলিশকে জানিয়েছেন কি না জানতে চাইলে আমি জানি না বলে ফোন কেটে দেন।
ঐ এলাকার নুরুজ্জামান নামের এক যুবক ক্ষোভ প্রকাশ করে সাংবাদিকদের বলেন, আমি বিভিন্ন লোকের মুখে জানতে পারি নুর ইসলাম ব্যাঙ আত্মহত্যা করেছে। সাথে সাথে আমি নিজেই এস আই আতিক কে বিষয়টি জানিয়েছি। এস আই আতিক ঘটনাস্থলেও গিয়েছিল কিন্তু কি কারণে উনি কোন পদক্ষেপ না নিয়ে মৃত নুর ইসলাম’র শ্যালক তোজার সাথে কথা বলে চলে আসে আমি জানি না। তবে পুলিশ ইচ্ছা করলে লাশ আটক করে ময়নাতদন্তের ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারতো। তাহলে প্রকৃত ঘটনা জানা যেতো তাকে হত্যা না কি আত্মহত্যা করেছে। আমি এই ঘটনার সাথে যারা জড়িত তাদেরকে তদন্ত সাপেক্ষে আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাচ্ছি।
এদিকে রংপুর মেট্রোপলিটন পরশুরাম থানার এসআই আতিক বলেন, আমি নামাজ পড়তে গিয়ে দেখি এক ব্যক্তির জানাযার নামাজের প্রস্তুতি নিচ্ছে কিভাবে মারা গেছে জানি না।
এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট এলাকার কাউন্সিলর আশেক আলী বলেন, হত্যা কি আত্মহত্যা জানিনা। তবে আমিও বিভিন্ন কথা শুনতেছি। কাউন্সিলর হিসেবে বিষয়টি পুলিশকে জানিয়েছেন কি না জানতে চাইলে তিনি জানান এটা আমার দায়িত্ব না।
রংপুর মেট্রোপলিটন পরশুরাম থানার অফিসার ইনচার্জ হোসেন আলী সাংবাদিকদের বলেন, আমি এ বিষয়ে কিছু জানিনা অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেব।