1. admin@dakbela.com : admin :
বিদ্যুতের লোডশেডিং খরতাপে অতিষ্ঠ জনজীবন বিপর্যস্ত জীবন যাত্রা - ডাক বেলা
সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ১০:০৫ অপরাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম :
পবিত্র কাবাঘরে ‌জয় বাংলা স্লোগান দেওয়া যুবক পদুয়ার হারুন কসবায় চিলড্রেন ওয়েলফেয়ার ফাউন্ডেশনের মেধাবৃত্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত নবীনগরে মোবাইল চুরির অপবাদ সহ্য করতে না পেরে যুবকের আত্মহত্যা শ্রীপুরে বোতাম তৈরি  কারখানায় ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড! আগুন নিয়ন্ত্রণে ৭টি ইউনিট  রাজশাহীতে সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণ গেল স্বামী-স্ত্রী ও শ্যালিকার আরএমপি’র রাজপাড়া থানার নতুন ভবনের উদ্বোধন মিঠাপুকুরে ওয়াল্ডভিষণ CVA কর্ম-পরিকল্পনা সভা অনুষ্ঠিত। কালিয়াকৈর মডেল প্রেস ক্লাবের বাৎসরিক শিক্ষা সফর কক্সবাজার গোপালপুর দ্বী-মূখী উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে অনিয়মের অভিযোগ কসবায় বৃহত্তর কুমিল্লা জেলা কিন্ডারগাটের্ন এসোঃ বৃত্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত

বিদ্যুতের লোডশেডিং খরতাপে অতিষ্ঠ জনজীবন বিপর্যস্ত জীবন যাত্রা

ডাক বেলা ডেস্ক :
  • প্রকাশের সময় : শুক্রবার, ৩ মে, ২০২৪
  • ৩৫ বার পঠিত

সরকার মাজহারুল ইসলাম, গাজীপুর জেলা প্রতিনিধি

গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপজেলার চা বাগান, ঝিঙাহাটি, কাপাসিয়াচালা, গাছবাড়ী,নয়াপাড়া, ছোট লতিফপুর (বাগানবাড়ী) এলাকাসহ কয়েকটি গ্রামে চলছে ঘন ঘন লোডশেডিং। সারা দেশের মত এ উপজেলায়ও চলছে প্রচন্ড খরতাপ, গলে যাচ্ছে রাস্তার পিচ। এমন অসহনীয় তাপপ্রবাহের মধ্যেও পাল্লা দিয়ে নিয়মিত বিদ্যুতের ঘন-ঘন লোডশেডিংয়ে অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে স্থানীয় জনজীবন। দেশে চলমান রেকর্ডকৃত তীব্র তাপপ্রবাহের মধ্যে লোডশেডিংয়ের অব্যাহত যন্ত্রনায় অতিষ্ট হয়ে উঠেছে কালিয়াকৈরবাসী। সকাল হতে না হতেই সূর্যের তাপ মাত্রা বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে সময়-অসময়ে দেখা দিচ্ছে পল্লীবিদ্যুৎ অফিসের কর্মকর্তা কর্মচারিদের সাজানো ও কথিত বিদ্যুৎ সঞ্চালনের লাইনে ক্রুটি। বিতরন, সঞ্চালন ব্যবস্থার ক্রুটি ও বিদ্যুতের চাহিদা বেড়ে যাওয়ার কারনে সাধারন মানুষকে দিন-রাতই পোহাতে হচ্ছে লোডশেডিংয়ের তীব্র যন্ত্রনায়। দুর্বিষহ হয়ে পড়েছে কালিয়াকৈর উপজেলার পশু-পাখিসহ মানুষের জনজীবন। ঝঁড়ের কারণে বিদ্যুৎ বিভ্রাটের ঘটনা মানুষের কাছে যেন অনেকটায় স্বাভাবিক। আকাশে কালো মেঘ দেখা দিলে বা সামান্য বৃষ্টিতেও বিদ্যুৎ থাকেনা। সেটিও অনেকের কাছে স্বাভাবিক হয়ে গেছে। কিন্তু বর্তমানে বিনা অজুহাতে বিদ্যুৎ না থাকায় মানুষ অতিষ্ট হয়ে পড়েছে। বৈশাখের এমন প্রচন্ড তাপপ্রবাহের মধ্যেও না আছে ঝঁড় না আছে বৃষ্টি। তবুও ঘণ্টার পর ঘণ্টা বিদ্যুতের লোডশেডিং দিয়ে ভয়াবহ দুর্ভোগের মধ্যে ফেলেছে এ উপজেলাবাসীকে। এ অবস্থা শুরু করেছে ঢাকা পল্লীবিদ্যুৎ সমিতি-১, কালিয়াকৈর, চান্দরা, মৌচাক জোনাল,ফুলবাড়িয়া সাব-জোনাল অফিসসহ বিভিন্ন অফিসের আওতাধীন এলাকায়। অভিযোগ উঠেছে কালিয়াকৈরসহ বিভিন্ন জোনাল অফিসের কর্মকর্তাদের উদাসিনতার কারনে অনেকটা এমন পরিস্থিতির সৃষ্টি হচ্ছে প্রতিনিয়ত। এখন চলছে গ্রীস্মকাল। বৈশাখ মাসের শুরুতেই বেড়েছে প্রচন্ড তাপ মাত্রা। শিল্পাঞ্চলখ্যাত কালিয়াকৈর উপজেলায় বিদ্যুৎ নিয়ে চলছে নানান নাটকীয়তা। বিশেষ করে বৈশাখ মাসে সারাদেশে চলমান এমন তীব্র তাপপ্রবাহের মধ্যে যেন আরো বেশী করে দেখা যাচ্ছে বিদ্যুতের ভেল্কিবাজি খেলা। ঝড়-বৃষ্টি বিহীন গ্রীস্মের শুরুতে তীব্র তাপপ্রবাহের কারনে সৃষ্ট প্রচন্ড খরতাপে বিদ্যুতের এমন লুকোচুরি খেলা আরো বেশি ভাবিয়ে তুলেছে স্থানীয় এলাকাবাসীকে। দিনে ও রাতে সময়ে অসময়ে নিয়মিত লুকোচুরি খেলছে এ অঞ্চলের পল্লীবিদ্যুৎ। বারবার বিদ্যুতের আসা-যাওয়ায় ক্ষুব্ধ হচ্ছে জনসাধারন। যখন বিদ্যুৎ থাকে না এমন সময় বিদ্যুৎ বিভাগের অফিসিয়াল নাম্বারে ফোন করেও পাওয়া যায় না, অথবা অটো ম্যাসেজ অপসন থেকে ব্যাস্ত আছি লেখা ম্যাসেজ চলে আসে। আবার ফোন রিসিভ করলেও দুর্ব্যবহার করা হয় গ্রাহকদের সাথে এমন অভিযোগও রয়েছে গ্রাহকদের। গত কয়েকদিনের দেশে চলমান রেকর্ডকৃত তাপপ্রবাহ যত বেশী তীব্র হচ্ছে, বিদ্যুতের লোডশেডিং যেন ততই পাল্লা দিয়ে বাড়ছে। দিনে কয়েক ঘন্টা ব্যাপী লোডশেডিং দিয়ে যাত্রা শুরু হয়। দুপুর ও সন্ধ্যার পরে ধাপে ধাপে আর রাতে চলে আসা-যাওয়ার পালাক্রম। যা শেষ রাত পর্যন্ত চলে। বিশেষ করে কালিয়াকৈর ও চান্দরা পল্লীবিদ্যুৎ জোনাল অফিস এর আওতায় এলাকায় এমন চিত্র বেশি। বারবার বলেও কোনও সুরহা হচ্ছে না। কর্তৃপক্ষ বলছে গরমের কারনে বিদ্যুতের চাহিদা বেড়ে প্রায় দ্বিগুন হয়েছে। তাছাড়া বিদ্যুৎ উৎপাদন কম হওয়ার কারনে চাহিদা অনুযায়ী বিদ্যুৎ না পাওয়ায় লোডশেডিং হচ্ছে। দেশে চলমান তীব্র তাপপ্রবাহের কারনে বিদ্যুতের চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় বাড়তি চাপের কারণে এসমস্যার সৃষ্টি হচ্ছে। এদিকে তীব্র গরমের মধ্যে বিদ্যুতের লোডশেডিংয়ের কারণে অফিস-আদালতেও স্বাভাবিক কাজকর্ম ব্যাহত হচ্ছে। তাপপ্রবাহ ও প্রচন্ড গরমের কারনে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান কয়েকদিন বন্ধ থাকার পর আবার চালু করা হলেও মঙ্গলবার থেকে পুনরায় বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। বিদ্যুৎ না থাকার কারনে গরমে শিক্ষার্থীসহ অফিস আদালতে অনেকে অসুস্থ্য হয়ে পড়ছে। কলকারখানায় ব্যহত হচ্ছে উৎপাদন। দিনে কমপক্ষে ১০থেকে ১২বার বিদ্যুৎ আসা-যাওয়া করছে। দিনে ৫থেকে ৭ঘণ্টা বিদ্যুৎ থাকে না এটা যেন নিয়মে পরিনত হয়েছে। আবার বিদ্যুৎও আসলেও ভোল্টেজের ভোগান্তিতে পড়ছে গ্রাহকরা। এমনি সমস্যা সম্মুখীন হচ্ছে কালিয়াকৈর উপজেলার ছোট লতিফপুর (বাগানবাড়ি) এলাকার কয়েক’শ গ্রাহক। এখনও ওই এলাকায় পুরাতন, লিকেজ ড্রপ তার ব্যবহার করা হচ্ছে। যা আবার বাড়ির টিনের চালের উপর দিয়ে রয়েছে। এতে প্রতিনিয়ত ওই সব লিকেস থেকে আগুন লাগা ও বিভিন্ন দুর্ঘটনা ঘটেই চলছে। এছাড়াও কাঠের খুঁটি গুলো বয়স প্রায় শত বছর পেরিয়েছে। যা বৃদ্ধ মানুষের নড়বড়ে দাঁতের মতো হয়ে গেছে। এছাড়াও একই এলাকায় বসবাস করেও কেউ কেউ ভিআইপি লাইনে থাকায় বিদ্যুতের সুযোগ পেয়ে থাকে, কি অন্যরা লোডশেডিংয়ের কারণে ভোগান্তি পড়তে হচ্ছে উপজেলার শিক্ষার্থী, রোগী, শিশু, কারখানার শ্রমিক, খেঠে খাওয়া শ্রমজীবি রিকশাচালক, দিনমজুরদের দূর্ভোগ আর ভোগান্তির যেন শেষ নেই। এছাড়াও শিক্ষার্থীদের পড়াশোনা ক্ষতির পাশাপাশি ক্ষতি হচ্ছে বাসা বাড়ীর মূল্যবান ইলেকট্রনিক্স সামগ্রী। কালিয়াকৈরে পল্লীবিদ্যুতের তিনটি জোনাল অফিসের তথ্যমতে জানা গেছে, উপজেলায় মোট বিদ্যুতের চাহিদা রয়েছে ২১৬মেগাওয়াট। এর মধ্যে কালিয়াকৈর জোনাল অফিসের চাহিদা রয়েছে ৬৫মেগাওয়াট, চান্দরা জোনাল অফিসের ৯৫মেগাওয়াট, মৌচাক জোনাল অফিসের ৫৬মেগাওয়াট। সব মিলিয়ে কালিয়াকৈরে বরাদ্দ অনুযায়ী প্রায় ২১৬মেগাওয়াট বিদ্যুৎ সরবরাহ হচ্ছে। তবে প্রচণ্ড গরমের সময় বিদ্যুতের চাহিদা বেড়ে দাঁড়ায় প্রায় ২৫০মেগাওয়াট। এর মধ্যে উপজেলার একমাত্র ওয়ালটন কারখানায় বিদ্যুতের চাহিদা রয়েছে প্রায় ৪২মেগাওয়াট। কালিয়াকৈরে চাহিদা অনুযায়ী নিয়মিত বিদ্যুৎ সরবরাহ থাকলেও পল্লীবিদ্যুতের কর্মকর্তারা দাবি করছেন তীব্র তাপপ্রবাহের কারনে বর্তমানে বিদ্যুতের চাহিদা অনেক বেড়ে গেছে। এছাড়া চাহিদার চেয়ে বিদ্যুৎ সরবরাহ বর্তমানে কম পাওয়া যাচ্ছে।

ছোট লতিফপুর গ্রামের বাবুল, মিঠু, নূর আলী, সামসুল, আলালসহ ওই গ্রামবাসী জানায়, আমাদের কোন পল্লী বিদ্যুতের বিল বাকি নেই। আমরা সব সময় সঠিক সময়ে বিল পরিশোধ করে আসছি। কিন্তু ঠিক সময় বিল পরিশোধ করলেও, সে ভাবে আমরা সেবাটা পাচ্ছি না। প্রতিনিয়ত বিদ্যুৎ যাওয়া আসা করতেছে। দিন-রাত ১০-১২ বার বিদ্যুৎ যা আশা করছে। এখন অতিষ্ঠ হয়ে গেছি আমরা। আবার একটুর জন্য বিদ্যুৎ আসলেও ভোল্টেজ পাচ্ছি না। ফ্রিজ, এসি তো চলা দূরের কথা। ফ্যান, লাইট ঠিক মতো চলছে না। আমরা এর দ্রুত সমাধান চাই। সমাধান না হলে। আমরা পল্লী বিদ্যুতের বিল দেয়া বন্ধ করে দিবো।

এবিষয়ে পল্লীবিদ্যুৎ সমিতি-১এর কালিয়াকৈর জোনাল অফিসের ডিজি এম প্রকৌশলি মিজানুর রহমান জানান, কালিয়াকৈর জোনাল অফিসের আওতায় ৬৫মেগাওয়াট বিদ্যুতের চাহিদা রয়েছে। বিদ্যুৎ উৎপাদন কম হওয়ার কারনে বিদ্যুৎ সরবরাহ কম পাচ্ছি যার কারনে লোডশেডিং হচ্ছে। তীব্র গরমে গ্রীডে সমস্যা হলে মাঝে মধ্যে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ রাখা হয়।
কালিয়াকৈর চান্দরা পল্লীবিদ্যুৎ জোনাল অফিসের ডিজি এম প্রকৌশলি জসিম উদ্দিন জানান, চান্দরা জোনাল অফিসের আওতায় প্রায় ৯৫মেগাওয়াট বিদ্যুতের চাহিদা রয়েছে। চাহিদা অনুযায়ী বিদ্যৃৎ সরবরাহও পাচ্ছি, তবে গরমের কারনে বিদ্যুতের চাহিদা অনেক বেড়ে যাওয়ার কারনে লোডশেডিং হচ্ছে।
###
কালিয়াকৈর প্রতিনিধি
তারিখ-০২.০৫.২০২৪ইং
মুঠোফোন:-০১৭২০৬২৭৪৮০

Facebook Comments Box
এই ক্যাটাগরির আরও খবর